পর্দা: নারীর মর্যাদার প্রতীক

/, News, Women in Islam/পর্দা: নারীর মর্যাদার প্রতীক

পর্দা: নারীর মর্যাদার প্রতীক

পর্দা: নারীর মর্যাদার প্রতীক
 আহমদ তবশির চৌধুরী

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاء الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا

অর্থাৎঃ “হে নবী! তুমি তোমার পত্নী, তোমার কন্যা এবং মোমেনগণের পত্নীগণকে বল, যেন তাহারা তাহাদের চাদর নিজেদের উপর (মাথা হইতে টানিয়া মুখমণ্ডল পর্যন্ত) ঝুলাইয়া লয়। এতদ্বারা তাহাদের পরিচয় অত্যন্ত সহজ হইবে এবং তাহাদিগকে কষ্ট দেওয়া হইবে না। বস্তুতঃ আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়াময়।” (সূরা আহযাবঃ ৬০)

“পর্দা নারীর মর্যাদার প্রতীক”। বিষয়টি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সময়োপযোগী। বেপর্দা আর নারী-পুরুষের অবাধ মোলা-মেশা সমাজে কেমন বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে এবং নারীকে কীভাবে ভোগ্য-পণ্যের বস্তুতে পরিণত করেছে তা আমরা আমাদের চারদিকে লক্ষ্য করলেই দেখতে পাই। পারিবারিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা, অশান্তি, দাম্পত্য-কলহ ও পারস্পরিক অবিশ্বাস, বিবাহ-বিচ্ছেদ, নারী-নির্যাতন ইত্যাদি সবকিছুর পেছনেই একটি প্রধান কারণ হলো পর্দাহীনতা এবং নর-নারীর অবাধ মেলা-মেশা।

যদিও ইসলামের পর্দা-ব্যবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞতা অথবা এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্যকে না বুঝার কারণে কেউ কেউ একে পশ্চাৎপদতা, সেকেলে, নারীকে শৃঙ্খলিতকরণের পন্থা, উন্নয়নের অন্তরায় এবং নারী ও পুরুষের মধ্যে একটি বৈষম্য সৃষ্টির প্রয়াস বলে আখ্যায়িত করে থাকেন। মূলত এই ভুল বুঝাবুঝির জন্য মুসলিম-বিশ্বের কতিপয় এলাকায় ইসলামের সত্যিকার শিক্ষার অপপ্রয়োগ আর পাশ্চাত্য গণমাধ্যমের নেতিবাচক ভূমিকাই দায়ী। পাশ্চাত্য গণমাধ্যমের এটা একটা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, ইসলামের কথা উঠলেই তার প্রতি একটা কুৎসিৎ আচরণ প্রদর্শন করা হয়। আর তাঁদের এই অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে আমাদের এই অঞ্চলেও অনেকে পর্দা-প্রথা সম্পর্কে বিরূপ ধারণা পোষণ করে থাকেন। একজন খ্রীষ্টান ‘নান’ বা ধর্মজাজিকা যখন লম্বা গাউন আর মাথা-ঢাকা পোশাক পড়ে থাকেন তখন তা আর পশ্চাৎপদতা, উন্নয়নের অন্তরায় বা নারীকে শৃঙ্খলিতকরণের প্রয়াস বলে বিবেচিত হয় না। বরং তা শ্রদ্ধা, ভক্তি বা মাতৃত্বের প্রতীক রূপেই বিবেচিত হয়।

নারী-পুরুষের পৃথকীকরণের যে-নির্দেশ ইসলাম দেয়, তা কোনো ভাবেই প্রাচীন অন্ধকার যুগের সংকীর্ণমনা দৃষ্টিভঙ্গি-প্রসূত নয়। হযরত ইমাম মাহ্‌দী (আঃ)-এর চতুর্থ খলিফা, আমাদের প্রয়াত ইমাম হযরত মির্যা তাহের আহমদ (রাহঃ) বলেন,

“বস্তুতঃ সমাজে নর-নারীর অবাধ মেলা-মেশার প্রশ্নটা বা এর উল্টোটার সঙ্গে সমাজের অগ্রবিমখুতা বা পশ্চাৎমুখিতার কোনো সম্পর্ক নেই। গোটা ইতিহাসেই দেখা যায় যে, সমাজগুলো সামাজিক বা ধর্মীয় তরঙ্গমালায় হয় তুঙ্গে উঠে অগ্রসর হয়েছে, নয়তো তার তলায় পড়ে নিমজ্জিত হয়ে গেছে।” (Islam’s Response To Contemporary Issues)

অতএব, ইসলামের পর্দা-ব্যবস্থা বা ক্ষেত্র-বিশেষে নারী-পুরুষের পৃথকীকরণ নারীকে শৃঙ্খলিত করার পরিবর্তে তাঁকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে, সমাজে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ-ব্যবস্থার প্রবর্তন করেছে। ইসলাম নারীকে কিরূপ আসনে অধিষ্ঠিত করেছে বা পর্দাপ্রথা নারীকে কী মর্যাদা দিয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়ার আগে আসুন আমরা দেখি যে, তথাকথিত প্রগতি, নারী-স্বাধীনতা, নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা সমাজকে বা নারীকে কী দান করেছে।

 

বিস্তারিত

By |2013-12-18T21:43:06+00:00November 10th, 2013|Islam, News, Women in Islam|0 Comments

About the Author:

Leave A Comment