‘সমসাময়িক বিশ্বে অস্থিরতা ও অশান্তি এবং সমাধান’ শীর্ষক এক শান্তি সম্মেলনে বক্তাগণ বলেছেন শান্তি আজ বর্বর হায়েনাদের কাছে জিম্মি। সন্ত্রাস ও নরহত্যা ধর্মবিরুদ্ধ কর্মকান্ড। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা যাবে না। যেহেতু এ বিষয়ে বিদায় হজ্বের ভাষণে হযরত মোহাম্মদ (সা.) বলে গেছেন ‘হে মানবমন্ডলী! সাবধান, তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না। কেননা তোমাদের পূর্বের জাতিগুলো ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কারণেই ধ্বংস হয়ে গেছে।’
আহমদীয়া মুসলিম জামাত, বাংলাদেশের উদ্যোগে আজ ঢাকার শাহবাগস্থ জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে আয়োজিত এই সম্মেলনে বাংলা একাডেমীর প্রাক্তন মহাপরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন ‘‘সমসাময়িক বিশ্বে অস্থিরতা ও অশান্তি’’ এবং আহমদীয়া মুসলিম জামাত, বাংলাদেশের মোবাল্লেগ ইনচার্জ মাওলানা আব্দুল আউয়াল খান চৌধুরী ‘‘ধর্মীয় উগ্রবাদ বনাম প্রকৃত ইসলামী শিক্ষা’’ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন। আহমদীয়া মুসলিম জামাত, বাংলাদেশের ন্যাশনাল আমীর মোবাশশের উর রহমানের এই সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন।
প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন শান্তি সবাই চায়, যে যার মত করে। এমনকি যারা অশান্তি সৃষ্টি করে তারাও শান্তি চায় তাদের মত করে। আইএস, তালেবান, আল-কায়েদা, জেএমবিরা শান্তি চায় মানবতাকে বিপন্ন করে; কার্যত ইসলামের বিপরীতে অবস্থান নিয়ে। শান্তি আজ বর্বর হায়েনাদের কাছে জিম্মি। জাতিসংঘ শান্তির অন্বেষন করেও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারছে না। তৃনমূল থেকে শান্তির প্রত্যাশা করা না গেলে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
মাওলানা আব্দুল আউয়াল খান চৌধুরী বলেন, মদীনা সনদে বলা হয়েছে কাউকে ইসলাম মানতে বাধ্য করা যাবে না। জিহাদের নামে জোর করে কোন ধর্মের অনুসারিকে ধর্মান্তরিত করা যাবে ন্।া এমন জিহাদের সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নাই। তালেবানিত্ব কোন জাতীয়তা বা কোন বিশেষ দেশের নাগরিকের নাম নয়। নির্দিষ্ট একটি সীমানায় আবদ্ধ কোন জীবেরও নাম নয়। এটি একটি বিকৃত মানসিকতার নাম। এটি যে কোন দেশে যে কোন সময় মাথাচাড়া দিতে পারে। তাই সময় থাকতেই এরা যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে তার জন্য পূর্ব প্রস্তুতি আবশ্যক।
সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, আহমদীয়া মুসলিম জামাত বিশেব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে। আহমদীরা ধর্মের নামে সন্ত্রাস ও নরহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার। আমাদের মটো হচ্ছে – ‘‘ভালবাসা সবার তরে ঘৃনা নয় কারো পরে। আমাদের দেশে সরকার মূলত সন্ত্রাসবাদীদের দমনের চেষ্টা করছে। তাদের সমূলে উচ্ছেদ করতে হলে শিক্ষিত সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। সন্ত্রাসের উৎপত্তিস্থলকে নিবৃত্ত করতে হলে সঠিক ইসলামী আদর্শ তথা হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর সঠিক জীবনাদর্শ শিক্ষা দেয়ার জন্য সকল মাদ্রাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বলতে হবে। তাহলেই গোড়া থেকে এ সন্ত্রাসের মূলোৎপাটন করা যাবে।
অতঃপর এক প্যানেল আলোচনায় ফিনল্যান্ডের ফিনিস একাডেমীর সিনিয়র ফেলো ড. সেলিম জাহাঙ্গীর, ব্রাক ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি ও সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর সৈয়দ এম হাসান হাশেমী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ড. নাজমা খান মজলিশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের ফাদার তপন ডি রোজারিও, আহমদীয়া মুসলিম জামাত, বাংলাদেশের নায়েব আমীর স্থপতি অধ্যাপক মীর মোবাশ্বের আলী ও দি ঢাকা ট্রিবিউন পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক জুলফিকার আলী মানিক অংশগ্রহণ করেন । প্রেস বিজ্ঞপ্তি।